Royalbangla
ডাঃ লায়লা শিরিন
ডাঃ লায়লা শিরিন

মলদ্বারে রক্তপাত ও ক্যান্সার

টিপস

রক্তপাত কেনো হয়? বিশেষত পায়ুপথ?

যারা পর্দানশিন বা যারা খুব লজ্জিত হন ব্যাক্তিগত সমস্যা বলতে, তারা পায়ুপথের সমস্যা এড়িয়ে যান বা লুকিয়ে রাখেন। অনেকেই মহিলাদের কাছেও সহজ হতে পারেন না। অনেকে আবার বলেন বেযায়গায় সমস্যা! (এটা আবার কি? ও আচ্ছা, পায়ুপথের সমস্যা ।)

ফলাফল পায়ুপথের ক্যান্সার অনেকটা ছড়িয়ে যাবার পরে এটি ধরা পড়ে। কিন্তু স্তন ক্যান্সার এর মত পায়ুপথের ক্যান্সারও নিরাময়যোগ্য। আগে ধরা পড়লে বেঁচে থাকার হার অনেক বেশী।

যাই হোক যেটা বলতে চাইছিলাম, রক্ত পড়ছে,

- অনেকেই এসে বলেন এই তো মাত্র একমাসের মত সমস্যা। জানেন কি খুব কম সময়ে আপনার যে কোন সমস্যা বেড়ে যাওয়া মানে কিন্তু এটা ক্যান্সার হতে পারে? কারন অন্যান্য রোগ কিন্তু এত দ্রুত বাড়ে না। আপনি হয়তো ভয়ে সময় কম বলেছেন যাতে অপারেশন এড়ানো যায়, কিন্ত এর কারনেই আমরা আপনাদের অনেক বেশি পরীক্ষা দিতে বাধ্য হবো। ক্যান্সার নাই এটা প্রমান করার জন্য।

- অনেকের ধারণা তাজা রক্ত বা বেশি রক্তপাত বেশি খারাপ! কিন্তু জানেন তাজা রক্ত মানে বড়জোর আপনি হয়তো পাইলস রোগে ভুগছেন যেটা অপারেশন করলে সম্পূর্ণভাবে নির্মুল করা সম্ভব।

- উল্টো দিকে যদি তাজা না গিয়ে মরা রক্ত, আমযুক্ত রক্ত, পেটে মোচড় দিয়ে পায়খানা হয় এগুলো ক্যান্সার এর লক্ষ্মণ হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

- আবার ধরুন কালো দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা হচ্ছে। ভাবলেন ও কিছু নয়। কিছুদিন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে সেরে যাবে। কিন্তু জানেন কি কালো কালো দুর্গন্ধযুক্ত পায়খানা রক্তপাতের কারণে হতে পারে? বিশেষত যদি একদম মলদ্বারের কাছে না হয়ে ক্যান্সার যদি উপরের দিকে হয়, এমনকি পাকস্থলীতে হলেও এমন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে রক্ত শুন্য এবং ফ্যাকাশে দেখাবে।

- মনে রাখবেন শুধু হঠাৎ ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়াও কিন্ত পায়ুপথের ক্যান্সার যা উপরের দিকে হয় তার একমাত্র লক্ষ্মণ হতে পারে।

Anal Bleeding And Treatment

- আমরা খুব কমন যে সমস্যা পাই ব্যাথা-বেদনা আর পায়খানা করার সময় ফোটা ফোটা রক্তপাত, এটি খুবই কম ক্যান্সার এর কারনে হয়। সাধারণত এটিকে 'এনাল ফিসার' বলে পায়ুপথ ছিড়ে রক্তপাত হয় এবং ছোট্ট একটি অপারেশন এটি ভালো হয়ে যায়। কখনো কখনো অপারেশন না করে শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও রুগী ভালো থাকতে পারেন।

- কিন্তু আপনি ভাবলেন ব্যাথা-বেদনা ছাড়া রক্তপাত হচ্ছে, আমি তো সহ্য করতে পারছি। নিশ্চয়ই এটা খারাপ কিছুই না। মনে রাখবেন বেশিরভাগ ক্যান্সারে প্রাথমিকভাবে ব্যাথা থাকেনা। সে কারণে রুগীরা অপেক্ষা করেন আর রোগ নিরাময়ের পর্যায়ের অনেক পরে তারা চিকিৎসার জন্য আসেন।

- আর একটি বিষয়, কখনো পায়ুপথের আঙুল দিয়ে পরীক্ষা করতে বাধা দিবেন না।ভাবতে পারেন পায়ুপথে আঙুল দিয়ে পরীক্ষার কি প্রয়োজন? কিছু ঔষধ আর কিছু পায়খানা নরম করার সিরাপ এই তো ঠিক আছে।

- না, ভুল ভাবছেন। বেশিরভাগ পায়ুপথের ক্যান্সার মলদ্বার এর কাছে হয়। শুধু মাত্র আংগুলের যে পরীক্ষা ডাক্তার করে থাকেন তাই দিয়েও অনেক আগেই ক্যান্সার সনাক্ত করা সম্ভব।

আসুন আমরা সচেতনতা বৃদ্ধি করি সব ধরনের ক্যান্সার এর। নিজেকে সচেতন করি। অন্যকেও।

এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/DrLailaShirinOncoSurgeon

লেখক
ডাঃ লায়লা শিরিন
সহযোগী অধ্যাপক, ক্যান্সার সার্জারী, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল।
চেম্বার
কনসালট্যান্ট, সার্জারী। (স্তন, পায়ুপথ, খাদ্যনালীর ক্যান্সার ও ল্যাপারস্কপিক সার্জারী বিশেষজ্ঞ )
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মতিঝিল, ঢাকা।
০২-৫৮৩১১৭৪০
০২-৫৮৩১১৭৪৩-৪
০২-৫৮৩১২৩৭২
০২-৪৮৩২০৯৬২-৫
০২-৪৮৩১৮৭১৫
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/DrLailaShirinOncoSurgeon

  1. royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ‌্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট

এক থালা বাঙালিয়ানা। আহা অমৃত


আপনি জানেন কি? শারীরিক পরিশ্রমে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। .........
বিস্তারিত

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কেন শারীরিক পরিশ্রম করবেন?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। ........
বিস্তারিত

ফেসলিফট

ডাঃ ইকবাল আহমেদ,সহকারী অধ্যাপক,বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
ফেসলিফট এই শব্দটার সাথে অনেকেই পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন সময় ফেসলিফটের নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এটা দেখে অনেকেই বুঝতে পারে না ব্যাপারটা কি।.......
বিস্তারিত

তীব্র এংজাইটি বা প্যানিকের সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা ও চিকিৎসা।

জিয়ানুর কবির,ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
নির্দিষ্ট বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দিপনা ট্রিগার করে ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিপদ, ব্যাথা বা শারীরিক সমস্যার হুমকি অনুভব হয় (আমার ক্ষতি হবে, শারীরিক অসুস্থ হয়ে যাব......
বিস্তারিত