সাম্প্রতিক একটি পোস্টে প্রথম বারের মত যারা মা হচ্ছেন তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তারা নরমাল ডেলিভারি না সিজারিয়ান ডেলিভারি করাতে আগ্রহী। একজন বাদে সবাই নরমাল ডেলিভারি করাতে চেয়েছেন। চলুন তাহলে নরমাল ডেলিভারির সুবিধা অসুবিধা নিয়ে কিছু কথা বলি। নরমাল ডেলিভারির সুবিধা :** স্বাভাবিক প্রসব (ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি) হল সন্তান জন্মদানের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় কারণ এটি প্রকৃতির উপায় এবং প্রতিটি মহিলার শরীর এই পদ্ধতিতে শিশু জন্ম দিতে পুরোপুরি সক্ষম যদি না কোনো জটিলতা থাকে। ** অস্ত্রোপচার পদ্ধতিতে (সি-সেকশন) মহিলাদের কিছু ওষুধ দেওয়া হয় বিশেষ করে এনেস্থেসিয়ার, যা প্রসবের পরেও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। স্বাভাবিক ডেলিভারিতে জন্ম-পরবর্তী জটিলতা নেই। ** আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, একজন মহিলার শরীর জন্মগতভাবে ভ্যাজাইনাল প্রসবের জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে যেহেতু সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পরে না তাই দ্রুত (১/২ দিনের মধ্যে) শরীর তার পূর্বাবস্থা পুনরুদ্ধার করে। ** নরমাল ডেলিভারি রক্তে হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে মায়েদের স্তন্যপান করাতে সাহায্য করে যা সিজারিয়ান ডেলিভারিতে অনুপস্থিত। ** নরমাল ডেলিভারির সময় এবং পরে অক্সিটোসিন এবং এন্ডোরফিনের মতো ব্যথা উপশমকারী হরমোন নিঃসৃত হয় যা মায়ের শরীরে ব্যথার অনুভূতিকে কমিয়ে দেয় এবং মায়ের শরীরে একধরণের পজিটিভিটি এবং সুখের অনুভূতি সঞ্চারিত করে, ফলে মাকে বিষণ্নতা এবং প্রসবোত্তর সমস্যার প্রতি কম সংবেদনশীল করে তোলে। নরমাল ডেলিভারির অসুবিধাসমূহ:** নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারির সময় মাকে যে ব্যথা সহ্য করতে হয় তা মানব জীবনে অনুভব করা সবচেয়ে ভয়ানক ব্যথার একটি। ** সংকোচন, মাসিকের রাস্তা ও পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া এবং ভূমিষ্ঠের সময় শিশুকে ঠেলে বের করার সময় যে ক্লান্তি আসে তা মায়ের শরীরে একটি উল্লেখযোগ্য ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। ** কিছু মহিলার ডেলিভারির রাস্তা ভালভাবে প্রসারিত হয় না। ফলে ডেলিভারি আটকে যায়, এক্ষেত্রে প্রসবে সাহায্য করার জন্য যোনিপথ কাটার প্রয়োজন হয়। একে আমরা এপিসিওটমি বলে থাকি। এতে সংবেদনশীল এলাকায় ব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ** যোনি এবং পেরিনিয়াল ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে রিপিয়ার করতে হয়। অ্যানেস্থেশিয়ার কাজ শেষ হয়ে গেলে সেলাইয়ের জায়গায় ব্যথা করতে পারে। ** কখনও কখনও, স্বাভাবিক প্রসবের সময় পেলভিক ফ্লোর ছিঁড়ে যায় এবং অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে যা মাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। ** কখনও কখনও, প্রসবের সময় অপ্রত্যাশিত সমস্যা দেখা দিতে পারে, এবং জরুরি সিজারের প্রয়োজন হতে পারে। তবে নিয়মিত গর্ভকালীন ফলোআপ ও অভিজ্ঞ প্রসূতি বিশেষজ্ঞের অধীনে ডেলিভারি করালে প্রসব সম্পর্কীয় ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে। লেখিকা |
- royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট |
আপনি জানেন কী চার ধরণের ক্ষুধা আছে |