Royalbangla
জিয়ানুর কবির
জিয়ানুর কবির

কী ভাবে বুঝবেন আপনার সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে? এবংএতে আপনার করণীয় কী?

মানুসিক স্বাস্থ্য

সিজোফ্রেনিয়া একটি জটিল মানসিক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিন্তা, আবেগ, অনুভুতি, পারস্পরিক সম্পর্ক ও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনিস্টিউটের গবেষণায় দেখা যায় যে, জনসংখ্যার প্রতি ১০০০ জনের ৬ জন এই রোগে আক্রান্ত। সাধারণত ১০ থেকে ২৫ বছরের ছেলেরা এবং ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মেয়েরা প্রথম এই রোগে আক্রান্ত হয়।

সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ সমূহঃ

DSM-5 অনুযায়ী নিচের (১)বা (২) বা (৩) সহ কমপক্ষে ২ টি সিম্পটম ১মাসের বেশি থাকলে সে সমস্যাকে সিজোফ্রেনিয়া বলে,

১) ভ্রান্ত বিশ্বাষ (Delusion)

২) অমূলক প্রত্যক্ষণ (Hallucination)

৩) অসংলগ্ন কথাবার্তা (Disorganized speech)

৪) কেটাটোনিক বা অস্বাভাবী আচরণ (Catatonic behaviour)

৫) নেগেটিভ উপসর্গ (সামাজিকভাবে নিজেকে গুয়িয়ে নেয়া, কাজকর্মে আগ্রহ না থাকা,বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা কমে যাওয়া, ভাবলেশহীন)

 সিজোফ্রেনিয়াতে করণীয়

চিকিৎসাঃ

সিজোফ্রেনিয়া রোগটি দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল হলেও বর্তমানে কার্যকরী চিকিৎসা আছে। প্রধান চিকিৎসা হলো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেডিসিন নেয়া। মেডিসিনের পাশাপাশি সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা একত্রে করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। সিজোফ্রেনিয়া রোগীর বিশেষ ধরনের কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি ভালো কাজ করে। সিস্টেমেটিক ফ্যামিলি থেরাপিও এই রোগের জন্য কার্যকর। এছাড়া সামাজিক দক্ষতা অর্জন, স্ট্রেস কমানো, পরিবারের সাথে সুস্পর্ক, নিজের হ্যালুসিনেশন ও ডিলুশন কমাতে সাইকোলজিক্যাল থেরাপি ভালো কাজ করে।

আশার কথা হলো, করোনাভাইরাসের এই সময়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসক নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারিভাবে আবার অনেকেই অনলাইনে সহায়তা দিচ্ছেন, তাই এই রোগের যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারবেন। পাশাপাশি সাইকোলজিষ্টরাও নিয়মিত সরাসরি ও অনলাইনে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। এই রোগের তীব্রতা বেশি হলে অনেক সময় রুগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এই সময়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালেই (কোভিড-১৯ পরীক্ষা করে) নিয়মিত রুগি ভর্তি করা হচ্ছে। কোন কারনে হঠাৎ মেডিসিন বন্ধ করলে এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যাবে, তাই অভিভাবক ও যত্নকারীদের খেয়াল রাখতে হবে, চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী রুগী যেন নিয়মিত মেডিসিন নেয়। রুগীকে মানসিক চাপমুক্ত রাখতে সাইকোলজিক্যাল থেরাপি নিতে উৎসাহিত করতে হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসায় সিজোফ্রেনিয়া রুগীরা ভালো হয় এবং সারাজীবন সুস্থ্য থাকতে পারেন। তাই রুগীদের দূরে ঠেলে না দিয়ে ও ভ্রান্ত ধারণা বাদ দিয়ে সঠিক চিকিৎসা মাধ্যমে এই মানুষদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

লেখক
জিয়ানুর কবির
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
বি-এস.সি (অনার্স), সাইকোলজি
পিজিটি (সাইকোথেরাপি)
এম.এস ও এম.ফিল (ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি)।
কল্যাণ মানসিক হাসপাতাল
দক্ষিণ কল্যানপুর,মিরপুর রোড, ঢাকা
ফোন নম্বর:০১৭৪৮৭৮৭৮২৩
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/jianur.kabir

  1. royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ‌্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট

এক থালা বাঙালিয়ানা। আহা অমৃত


.

আপনার শিশুর মানসিক বিকাশে আপনি কিভাবে ভুমিকা রাখবেন?


Dr. Fatema Zohra
.

আপনি কি ডিপ্রেশনে আক্রান্ত?


জিয়ানুর কবির,সাইকোথেরাপিস্ট
.

শারিরীক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে রমজান মাসে করনীয়


Dr. Fatema Zohra
.

ডিপ্রেশনের সাইকোলজিক্যাল কারণ


জিয়ানুর কবির
.

মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম কতটা দরকারি?


Dr. Fatema Zohra
.

কিভাবে বুঝবেন আপনি উদ্বিগ্নতায় (Anxiety) আক্রান্ত?


জিয়ানুর কবির
.

আসুন সংক্ষেপে জানি বিষন্নতা বা depression কি ? কি করা উচিত ?


ডা. ফাতেমা জোহরা
.

বাচ্চাদের পিতা-মাতার স্নেহ-ভালোবাসা কেন প্রয়োজন?


জিয়ানুর কবির
.

মানসিক সেবাপ্রদানকারী কি সঠিক ডিগ্রীধারী??


জিয়ানুর কবির
.

প্রবীণদের আক্রমণাত্মক আচরণ: পরিবারের সদস্যদের করণীয়


ডা. ফাতেমা জোহরা

আপনি জানেন কি? শারীরিক পরিশ্রমে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। .........
বিস্তারিত

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কেন শারীরিক পরিশ্রম করবেন?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। ........
বিস্তারিত

ফেসলিফট

ডাঃ ইকবাল আহমেদ,সহকারী অধ্যাপক,বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
ফেসলিফট এই শব্দটার সাথে অনেকেই পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন সময় ফেসলিফটের নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এটা দেখে অনেকেই বুঝতে পারে না ব্যাপারটা কি।.......
বিস্তারিত

তীব্র এংজাইটি বা প্যানিকের সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা ও চিকিৎসা।

জিয়ানুর কবির,ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
নির্দিষ্ট বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দিপনা ট্রিগার করে ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিপদ, ব্যাথা বা শারীরিক সমস্যার হুমকি অনুভব হয় (আমার ক্ষতি হবে, শারীরিক অসুস্থ হয়ে যাব......
বিস্তারিত