- ১. ১। ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ: গাজরের মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন। গাজরে প্রচুর পরিমানে ফাইটো ক্যামিক্যাল উপাদান রয়েছে যা শরীরের কিছু প্রটিনের উৎপাদন এবং শক্তিমাত্রা বৃদ্ধি করে। এসকল প্রটিন রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি করে, তেমন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকরী।
- ২। দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করেঃ চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে যেসব খাবার খাওয়া জরুরী তার মধ্যে গাজর অন্যতম। সুস্বাস্থ্য ও দৃস্টি শক্তি স্বাভাবিক রাখতে আবশ্যক উপাদান ভিটামিন এ। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে যা দৃষ্টিশক্তির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, গাজরে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিনকে ম্যাকুলার অবক্ষয়, গ্লুকোমা এবং বয়স-সম্পর্কিত ছানি থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত গাজর খেলে অল্পদিনেই চোখের উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তনগুলি লক্ষ্য করা যায়।
- ৩। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ গাজর হৃৎপিণ্ড এবং রক্তচাপের রোগীদের জন্য অত্যন্ত ভাল। এগুলিতে বিটা ক্যারোটিন, আলফা-ক্যারোটিন এবং লুটিন রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরলের সাথে লড়াই করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, গাজরে থাকা পটাসিয়ামগুলি আপনার রক্তনালী এবং ধমনীতে টানটানাকে শিথিল করতে পারে যা ফলস্বরূপ রক্ত প্রবাহ এবং সঞ্চালন বাড়াতে এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে স্ট্রেস হ্রাস করতে সহায়তা করে।
- ৪। মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করেঃ সামগ্রিক মুখের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে গাজর। শাকসবজি খাওয়ার সময় দাঁতের ফাঁকে থেকে যাওয়া খাদ্যের কণা বের করে আনে। মুখের অভ্যন্তরের লালাগ্রন্থির সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে এবং অম্ল ও ক্ষারের ভারসম্য বজার রেখে দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা করে।
- ৫। যকৃতের ক্ষত প্রতিরোধ করেঃ গাজর পরিবেশগত রাসায়নিকগুলির বিষাক্ত প্রভাব থেকে যকৃতকে রক্ষা করে। গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে , যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও, এটি লিভারে পিত্ত এবং চর্বি জমা হওয়া হ্রাস করে।গাজরের দ্রবণীয় ফাইবার বর্জ্য অপসারণের সুবিধার্থে লিভার এবং কোলনকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। নিয়মিত গাজর খাওয়া লিভারের প্রদাহ বা সংক্রমণ রোধে সহায়তা করে যা হেপাটাইটিস, সিরোসিস এবং কোলেস্টেসিসের মতো লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে।
- ৬। ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখেঃ উজ্জ্বল ত্বকের জন্য যা খাওয়া প্র্রয়োজন তার মধ্যে গাজর অন্যতম। ভিটামিন এ এবং অন্যান্য বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় গাজরও ত্বকের জন্য ভাল। গাজর সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষিত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্থ ত্বকের টিস্যুগুলি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। গ্রীষ্মে গাজরের রস পান করা শক্তিশালী প্রাকৃতিক সান ব্লকের কাজ করে। গাজর ত্বককে ময়শ্চারাইজ রাখতে এবং ব্রণ, রঙ্গকতা, দাগ এবং অসম ত্বকের সুরকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।গাজর ত্বককে স্বাস্থ্যকরএবং প্রাণবন্ত রাখে।
- ৭। বদহজম নিরাময় করেঃ হজমকারী ফাইবার বা তন্তু সমৃদ্ধ গাজর ভালো হজমের জন্য উপকারী। মলত্যাগ সহজ করে। গাজরের নিয়মিত সেবনে অন্ত্রের গতিবিধি নিয়মিত রাখতে, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করতে এবং আপনার কোলন এবং পেটকে বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করবে।
- ৮। স্ট্রোক এর ঝুঁকি কমায়ঃ প্রতিদিন একটি গাজর খাওয়া স্ট্রোকের ঝুঁকি 68 শতাংশ কমাতে পারে। এটি গাজরে উচ্চ স্তরের বিটা ক্যারোটিনের কারণে। স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমাতে, সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ বার গাজর খাওয়া শুরু করুন।
- ৯। রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখেঃ গাজরে উচ্চ মাত্রায় চিনি থাকলেও তা ক্ষতিকর নয়। সুস্বাস্থ্যের জন্য উদ্ভিদজ চিনি বা সুক্রোজ ডায়াবেটিস রোগীর শরীরের গ্লুকোজের চাহিদা পূরণের জন্য দরকারী।
- ১০। বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়ঃ যদি বছরের পর বছর আরও কম বয়সী দেখতে চান তবে আজই গাজর খাওয়া শুরু করুন। গাজর একটি শক্তিশালী বয়স রক্ষাকারী ফল বা সবজী হিসাবে পরিচিত যেহেতু এটি কার্যকরভাবে কোষের বার্ধক্য হ্রাস করতে পারে। এটি মূলত উচ্চ বিটা ক্যারোটিন সামগ্রীর কারণে যা নিয়মিত বিপাকের কারণে শরীরে কোষের ক্ষয়কে বিলম্বিত করে।
- এছাড়াও, ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় গাজর কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। কোলাজেন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখার জন্য অত্যাবশ্যক যা কুঁচকে যাওয়া, সূক্ষ্ম রেখা এবং বার্ধক্যজনিত অন্যান্য লক্ষণগুলি রোধ করতে সহায়তা করে। তারুণ্যের চেহারা ধরে রাখতে, প্রতিদিন এক গ্লাস গাজরের রস পান করুন। গাজরের প্রচুর ঔষধি ও স্বাস্থ্য উপকার রয়েছে। সুস্বাদু এ গাজর তাই নিয়মিত কাঁচা অথবা রান্না করে সবজি হিসেবে খাবার তালিকায় রাখা উচিৎ।
রয়াল বাংলা ডেস্ক |
নিয়মিত গাজর খাওয়ার উপকারীতা |
গাজর |
- royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট |
ওয়েট লস জার্নিকে সহজ করতে ৬ টি স্মার্ট ট্রিকস |