Royalbangla
পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা
পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা

করোনার নতুন করে সংক্রমনে: প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধী খাবারের তালিকা ও লাইফস্টাইল

রোগ প্রতিরোধ

করোনার নতুন স্ট্রেইন শক্তিশালী হয়ে আবার ছড়িয়ে পড়ছে । এমন পরিস্থিতিতে দরকার স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ ও সেই সাথে সঠিক লাইফস্টাইল।

আসুন সংক্ষেপে একটু জেনে নেই আমাদের কী করা উচিত এমন পেনডেমিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে

এক.ভিটামিন সি

ভিটামিন সি এর অপর নাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড নয় এখন গবেষণা বলছে জীবন।কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এর পুষ্টিমুল্য অনেক অনেক ভার। লেবু,আমলকী,পেয়ারা,কমলা, মাল্টা,গাজর,আমড়া,জাম্বুরা ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। সাপ্লিমেন্টারি ভিটামিন সি খাবেন না।কারণ এর চেয়ে ফলমুলের মাধ্যমে খাওয়া আরও বেশি কার্যকর। এটা ধীরে ধীরে আমাদের শরীরের সঙ্গে মিশে যায়।তাছাড়াও কেমিকেল কখনোই ভালো হতে পারেনা।সি এর প্রয়োজন মেটাতে সজিনা পাতাও কিন্তু গ্রহন করতে পারেন।

দুই. ভিটামিন ডি

বিশেষজ্ঞরা এখন বলছেন ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে। কোন কোন গবেষণা এও বলছে শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রার ভিটামিন ডি এর অভাবে করোনাতে মারা যাচ্ছে মানুষ। ভিটামিন ডি পেতে তীব্র রোদে মাত্র কয়েক মিনিটেই দুর্বল হয়ে সংক্রামক জীবাণু।সবচেয়ে ভালো হয় সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টের মধ্যে গা এলিয়ে দিলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া সম্ভব।এছাড়াও খাবারের মধ্যে দুধ,কড লিভার অয়েল, মাছের তেল, জায়ফল, লবঙ্গ, এলাচি, পোস্তদানা, গাজর, গোলমরিচ, হলুদ, জিরা, আদা, কাঁচামরিচ, রসুন, ডিমের কুসুম, দুধ, আখরোট, কাজু বাদাম ইত্যাদি গ্রহণ করুন।সাপ্লিমেন্টস প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন অবশ্যই।

তিন.জিংক

স্বাস্থ্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়।জিংক শরীরের নতুন কোষ এবং এনজাইম তৈরিতে, কার্বোহাইড্রেট প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাবারে ফ্যাট এবং প্রোটিন তৈরিতে সহায়তা করে এবং পেশী এবং ক্ষত নিরাময়ের গতি বাড়ায়।গবেষনায় প্রমান হয়েছে যে জিংক সর্দি এবং ভাইরাস এলার্জি ও জ্বরে আক্রান্তদের লক্ষণ হ্রাস করে।উচ্চ জিংকযুক্ত খাবার যেমন আঁশযুক্ত মাছ,ডিম, বাদাম,শিম, ছোলা, মসুর, মটরশুটি ইত্যাদি গ্রহণ করুন।

চার.আদা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আদা একটি যাদুকরি উপাদান। বিশেষত যদি আপনি এরই মধ্যে ঠান্ডায় ভুগে থাকেন।আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শীত ও ফ্লু উপসর্গ, বমি বমিভাব ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করে। এছাড়া, আয়রন, দস্তা, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামে পরিপূর্ণ বলে আদা রোগ প্রতিরোধের লড়াইয়ে দারুণ কার্যকরি।আপনার একটি দারুণ পুষ্টিকর খাবার হতে পারে চিনি ছাড়া আদা চা!

এছাড়াও সবুজ শাকসবজী ফলমূল বেশি করে খাবেন।

corona prevention tips bangla

ক.৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন।
খ.অতিরিক্ত ভাজা পোড়া চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
গ.অতিরিক্ত ভাত,রুটি খাওয়া থেকে বের হয়ে আসুন।
ঘ.প্রোটিন জাতীয় খাবার একটু বেশি গ্রহণ করুন।
ঙ.স্ট্রেস একদম নিবেন না।মনে রাখবেন মনোবলে মানুষ সব জয় করে ফেলতেও সক্ষম হয়।
চ.নিয়মিতো ৩০ মিনিট অন্তত হাঁটবেন।
ছ.বারবার হাত ধুবেন,বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) ও ডায়েটারি গাইডলাইনস অব বাংলাদেশের সুপারিশ অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ১০০ গ্রাম শাক, ২০০ গ্রাম অন্যান্য সবজি ও ১০০ গ্রাম ফল খাওয়া প্রয়োজন।কিন্তু আমরা কয়জনই বা মানি।আপনার এই প্রয়োজন মেটাতে ডায়েটিশিয়ানের জুড়ি নেই।তাই আসুন সুস্থ থাকতে সঠিক লাইফস্টাইল ও সঠিক খাদ্য গ্রহণ করি।

লেখক
পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা
কনসালটেন্ট ডায়েটিশিয়ান
ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

  1. royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ‌্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট

এক থালা বাঙালিয়ানা। আহা অমৃত


আপনি জানেন কি? শারীরিক পরিশ্রমে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। .........
বিস্তারিত

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কেন শারীরিক পরিশ্রম করবেন?

ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক,আবাসিক চিকিৎসক, ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল এন্ড ওয়েলফেয়ার হোম
প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৩০-৬০ মিনিট করে, সপ্তাহে ০৫ দিন (মোট ১৫০-৩০০ মিনিট) এমন কিছু কায়িক পরিশ্রম, যাতে হৃদ স্পন্দন বৃদ্ধি পায় ও ঘাম হয়। ........
বিস্তারিত

ফেসলিফট

ডাঃ ইকবাল আহমেদ,সহকারী অধ্যাপক,বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ
ফেসলিফট এই শব্দটার সাথে অনেকেই পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন সময় ফেসলিফটের নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এটা দেখে অনেকেই বুঝতে পারে না ব্যাপারটা কি।.......
বিস্তারিত

তীব্র এংজাইটি বা প্যানিকের সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা ও চিকিৎসা।

জিয়ানুর কবির,ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
নির্দিষ্ট বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দিপনা ট্রিগার করে ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিপদ, ব্যাথা বা শারীরিক সমস্যার হুমকি অনুভব হয় (আমার ক্ষতি হবে, শারীরিক অসুস্থ হয়ে যাব......
বিস্তারিত