Royalbangla
ডায়েটিশিয়ান সিরাজাম মুনিরা
ডায়েটিশিয়ান সিরাজাম মুনিরা

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের কারন, লক্ষন ও সম্ভাব্য প্রতিকার

টিপস

কিডনি রোগ নির্দেশ করে আপনার যে আপনার কিডনির যেভাবে কাজ করার কথা ছিলো সে তার কাজ ঠিক-ঠাক ভাবে করছে না। দীর্ঘদিন ধরে যদি কিডনির এই সমস্যা কিংবা ড্যামেজ থাকে তাহলে সেটাকে বলা হয় ক্রনিক কিডনি ডিজিজ। আজকের আর্টিকেলে আমরা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের কারন, লক্ষন ও সম্ভাব্য প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো।

কিডনি আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্গান। এর প্রধান কাজ হলো বডি থেকে বর্জ্য-পদার্থ, টক্সিন ইত্যাদি পেশাবের সাথে দেহ থেকে বের করা, এক কথায় ব্লাডকে ফিল্টার ও পিউরিফাই করা হচ্ছে কিডনির প্রধান কাজ। এছাড়াও কিডনি বিভিন্ন হরমোন ও এনজাইম নি:সরন করে, দেহের ব্লাড প্রেশার ও ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স করে যেগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের কারনে কারো কিডনি ফাংশন একেবারে লস হয়ে যেতে পারে। তখন বডির ওয়েস্ট ম্যাটারিয়াল ও টক্সিন গুলো রক্তে জমে দেহের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করে দিতে পারে।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের কারন:

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ২ টি প্রধান কারন হলো, হাই ব্লাড প্রেশার এবং ডায়বেটিস। কেউ যদি বেশ কয়েকবছর যাবৎ এই দুটো রোগে ভুগেন তাহলে সেক্ষেত্রে তার ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়। ক্রনিক কিডনী ডিজিজ বা সিকেডির গুরুত্বপূর্ণ প্রধান কারনগুলোর মধ্যে ডায়বেটিস, হাইপারটেনশন, গ্লোমেরুনেফ্রাইটিস, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাথানাশক মেডিসিন সেবন, ফ্যামিলি হিস্ট্রি ইত্যাদি প্রধান। দীর্ঘদিন ধরে ডায়বেটিস (এক কথায় রক্তে অতিরিক্ত ব্লাড সুগারের উপস্থিতি) কিডনির গ্লোমেরুলার বেসমেন্টকে ইফেক্ট করে। সহজ কথায় কিডনি ফিল্টারিং ইউনিটকে লিকেজ করে দেয়। ফলশ্রুতিতে ব্লাড ফিল্টারিং এর সময় এর মধ্যকার প্রোটিন এবং রেড ব্লাড সেল ইউরিনে চলে আসে। যেটা ইউরিন টেস্ট করলে প্রোটিনের উপস্থিতি জানান দেয়।

অন্যদিকে হাইপারটেনশনে, আর্টারির দেয়ালগুলো অনেক বেশি প্রেসার নেওয়ার কারনে ড্যামেজ হয়ে কিডনির ফাংশন বাধাগ্রস্ত করতে পারে। গ্লোমেরুনেফ্রাইটিসেও কিডনির ফিল্টারিং ইউনিট লিকেজ হয়ে যায়। এছাড়াও রিকারেন্ট কিডনি ইনফেকশন ও লুপাস সহ অন্যান্য অটোইমিউন ডিজিজ ও দায়ী হতে পারে।

কিডনি ডিজিজ বংশগত ও হয়। কারো ফ্যামেলিতে যদি কিডনি রোগী থাকে, সেক্ষেত্রে তার ও রিস্ক থেকে যায়।

ক্রনিক কিডনি ডিজিজের লক্ষন:

- ঘন ঘন প্রশ্রাব দেখা দেওয়া।

- দূর্বলতা-ক্লান্তি-লো এনার্জি লেভেল

- ক্ষুধা কমে যাওয়া।

- হাত-পা ফুলে যাওয়া।

- লো ভিটামিন ডি লেভেল।

- Fomy or bubbly urine

- চোখের উপর নীচ ফোলা লাগা।

- ঘুমের সমস্যা

- বমি বমি ভাব কিংবা বমি ইত্যাদি।

কিডনি ফাংশন চেক করার জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট:

আপনার কিডনি সুস্থ আছে কিনা সেটা জানার জন্য নীচের টেস্ট গুলো করতে পারেন। যেকোন ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকেই করাতে পারবেন।

- Microalbumin urine

- BUN

- S.creatinine

- USG of KUB

- eGFR rate

এই পর্যন্ত পড়ে অনেকের মনের প্রশ্ন হতে পারে তাহলে এর থেকে বাঁচার উপায় কি? কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?

এক্ষেত্রে প্রয়োজন ডায়টারি ট্রিটমেন্ট। যেটা খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে তেমন জেনেরিক কোন সাজেশন দেওয়া সম্ভব না। কারন এক একজনের কিডনী স্টেজ অনুযায়ী সোডিয়াম, প্রোটিন রেস্ট্রিকশন, ফ্লুইড রেস্ট্রিকশন, ডাইইউরেটিকস ইত্যাদি কাটডাউন করতে হয় বা বাড়াতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিডনি পেশেন্টদের হাইপারক্যালেমিয়া দেখা যায়, তখন স্টেজ অনুযায়ী তাদের পটশিয়াম যুক্ত খাবার গ্রহনের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর সাথে ডায়বেটিস এবং হাইপার টেনশন নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজনীয় গাইড লাইন দেওয়া হয়।

CKD গুরুতর হয়ে অর্থাৎ ক্রিয়েটিনিন লেভেল খুব বেশি বেড়ে গিয়ে কিডনি ফেইলিওর হয়ে গেলে হেমোডায়লাইসিস ও পেরিটোনিয়াল ডায়লাইসের অপশন আছে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে ডায়ালাইসিস কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। যাদের ফ্যামিলিতে কিডনী প্যাশেন্ট আছেন এবং ডায়লাইসিসের প্রয়োজন হয় তারা জানেনে বিষয় টা কতটা সিরিয়াস আসোলে!

তাই কিডনী প্যাশেন্টের ক্ষেত্রে অবশ্যই হেলা ফেলা না করে একজন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট এর কাছে তার জন্য সঠিক রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী ডায়েট প্ল্যান নিতে ভুলবেন না।। আর ডায়বেটিস, হাইপারটেনশনকে যত প্রশয় দেওয়া হবে অন্যান্য ডিজিজের সাথে কিডনি ডিজিজেও এক ধাপ এগিয়ে থাকা হবে।

তাই কিডনি সুস্থ থাকতে ডায়েট, লাইফস্টাইল মোডিফিকেশনকে গুরুত্ব দিন। কেনোনা এইটার বিকল্প নেই!!

এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/DietitianMunira

লেখক
পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা
কনসালটেন্ট ডায়েটিশিয়ান
ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন

www.facebook.com/DietitianMunira

  1. royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ‌্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট

ক্যানসার প্রতিরোধে করণীয়


বাচ্চারা কীভাবে রোজা রাখবে

বড়োরা রোজা রাখছে এটা দেখে অনেক বাচ্চাই রোজা রাখতে বায়না করে। বাচ্চা যদি আগ্রহের সাথে রোজা রাখতে চায়, সেহরিতে উঠে যায় সেক্ষেত্রে তাকে উৎসাহ দেওয়াই ভালো।............
বিস্তারিত

4D বায়োফিজিক্যাল প্রোফাইল।

4D
কি কি ক্ষেত্রে বায়োফিজিক্যাল প্রোফাইল করার প্রয়োজন হয় তা জেনে নিন-...........
বিস্তারিত

ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতি ও প্রতিরোধ

mobile phone
মোবাইল ফোন: আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।..............
বিস্তারিত

রমজান মাসে হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম: কখন, কীভাবে এবং কেন?

রমজান মাসে হাঁটাহাঁটি
রমজান মাস হলো ধর্মীয় অনুশীলন, আধ্যাত্মিকতা ও সংযম প্রকাশের মাস। এই মাসে আমাদের জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আসে। আমরা দীর্ঘ সময় রোজা রাখি,...........
বিস্তারিত
fruit

পছন্দের ফল কিভাবে খাচ্ছেন??

খেজুর

খেজুরের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

Erectile dysfunction

লিঙ্গের শীতলতা বা লিঙ্গ শৈথিল্য (Erectile dysfunction) কি?

tooth scaling

দাঁত স্কেলিং কি?

ice cream

আইস্ক্রিমে আসক্তি!!!

heart

হৃদয় দিয়ে হৃদয়ের যত্ন নিন


ডিপ্রেশন
1
Raw Banana
2
Care of Mental Health
3
Diabetes
4
emotions
5
family
6
pregnancy
7
ক্যান্সারের ঝুঁকি
8
টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাবে কী হয়?
9
Necessary to Drink Milk
10