রমজান মাস মুসলমানদের একটি পবিত্র মাস। সওয়াবের মাস। এবাদত বন্দেগী ও সংযমের মাস। এ মাস আল্লাহ পাকের রহমত ও বরকতের মাস। রোযা আমাদের প্রতিটি কাজে সংযমের শিক্ষা দেয়। সংযম করতে হয় কথায়, সংযম করতে হয় কাজে, সংযম করতে হয় খাওয়া দাওয়ায়।
কেন সমস্যা হবে?
রমযান মাসে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে অনেক পরিবর্তন হওয়ায় নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়। আর এবারের রোযাগুলো হবে অনেক দীর্ঘ। তারপর আছে তীব্র গরম। শরীরে হবে পানিশূন্যতা। আর ইফতারিতে আমরা খাই ভাজাপুরা, আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া হয় কম। ফলে এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয় বেশী। আর কোষ্ঠকাঠিন্যর জন্যই আমরা পায়ুপথ ও মলদ্বারের সমস্যায় ভুগি বেশী।
কি সমস্যা হবে?
অনেক সমস্যাই হতে পারে। তবে রমযান মাসে কোষ্ঠকাঠিন্য ও কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কিত পায়ুপথ ও মলদ্বারের সমস্যাগুলো বেশী হয়। এ সমস্যাগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশী হয়—
• মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাওয়া,
• পায়খানা করতে কষ্ট হওয়া।
• পায়খানার রাস্তায় জ্বালা পুড়া করা।
• মলদ্বারে ব্যথা হওয়া।
অধিকাংশ মানুষই এই সমস্যায় ভুগে। আমাদের একটু সচতেনতাই এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে। এখন আমাদের জানতে হবে যে আমরা কি করে বুজবো আমাদের পাইলসের সমস্যা নাকি ফিসারের সমস্যা?
পাইলস হলে সাধারনত–
• পায়খানার সাথে অথবা আগে বা পরে রক্ত যাবে।
• রক্ত একদম তরতাজা যাবে।
• ফুটা ফুটা হয়ে রক্ত যাবে অথবা পিচকারি দিয়ে যাবে।
• অনেক সময় শক্ত পায়খানা হলে পায়খানার গায়ে লাগানো থাকবে বা
• টিস্যু পেপারে রক্তের দাগ লাগানো থাকবে।
• কোন ব্যথা সাধারনত থাকে না।
ফিসার হলেও –
• রক্ত যাবে কিন্তু খুবই অল্প পরিমানে যাবে।
• সাধারনত ফুটা ফুটা হয়ে যাবে না।
• পায়খানার গায়ে লাগানো থাকবে অথবা টিস্যু পেপারে রক্তের দাগ লাগানো থাকবে।
• কিন্তু প্রচণ্ড ব্যথা হবে।
• টয়লেট করতে ভয় হবে ব্যথার কারনে।
তাহলে কি করব?
একটু সাবধান হলেই, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে ও নিয়ম কানুন মেনে চললে আমরা খুব সহজেই এ সমস্যা গুলো এড়িয়ে চলতে পারি। তাই রমযান মাসে আমাদের খাদ্যতালিকায় আনতে হবে কিছু পরিবর্তন ও মানতে হবে কিছু নিয়ম কানুন। যেমন-
• ইফতারির সময় বেশী করে পানি খান ,বেল অথবা পেঁপের শরবত খান।
• প্রয়োজনে ঈসপগুলের ভুষি পানিতে ভিজিয়ে লেবু চিপে শরবত করে খাবেন।
• মৌসুমি ফলমূল যেমন- তরমুজ, বরই, পেয়ারা, পেঁপে, বেল, খেজুর বেশী বেশী খান।
• ছুলা, বুট, মুরি পরিহার করুন।
• আঁশযুক্ত খাবার যেমন- শাক সবজি,ফলমূল বেশি খাবেন,মাংশ কম খাবেন।
• ফাস্ট ফুড, বেশি মসলাযুক্ত, ঝাল ও চর্বি জাতীয় খাবার খাবেন না।
• পানি বেশি খাবেন,সফট ড্রিংকস খাবেন না।
• চিঁড়া ও দই খেতে পারেন।
• দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য বা পাতলা পায়খানা এড়িয়ে চলবেন।
• নিয়মিত টয়লেট /মলত্যাগ করবেন।
• শরীরের ওজন কমাবেন।
• অপ্রয়োজনে অধিক সময় টয়লেটে বসে থাকবেন না।
• প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
তাই আসুন আমরা একটু সাবধান হই, সংযমী হই। খাদ্যতালিকায় আনি কিছু পরিবর্তন, মেনে চলি কিছু নিয়ম কানুন। আর সহজেই এড়িয়ে চলি এই কষ্টকর রুগ থেকে। কেননা সুস্থতা হচ্ছে আল্লাহ্র সবচেয়ে বড় নিয়ামত। সবাই ভালো থাকুন। আর আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে রমজান মাসের পূর্ণ ফজিলত আদায় করার তৌফিক দান করুন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/Colorectal-Care-Dr-Md-Ashek-Mahmud-Ferdaus-911427482298482
লেখক
Colorectal Care Dr. Md Ashek Mahmud Ferdaus
FCPS(surgery) FISCP(India) Ms(Colorectal Surgery) Bangabandhu Sheikh Mujib Medical Univarsity
Chamber: নেক্সাস হাসপাতাল-ঢাকা রোড - ময়মনসিংহ
Contact:01796586561
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/Colorectal-Care-Dr-Md-Ashek-Mahmud-Ferdaus-911427482298482