-
মিষ্টিকুমড়া অনেকের কাছে বেশ প্রিয় আবার অনেকেই নাক সিটকায় । যারা মিষ্টিকুমড়ার নাম শুনলে নাক সিটকান, আজকের লেখা পড়ার পর আশা করছি যে তারা আজকে থেকে মিষ্টিকুমড়ার প্রেমে পড়ে যাবেন।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছে মিষ্টি কুমড়া। এছাড়াও প্রায় সবধরনের ভিটামিনই আছে মিষ্টিকুমড়াতে । সবজি হিসেবে আলাদা করে তো খাওয়াই যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মাছ, মাংস, ডালের সঙ্গে কুমড়া রান্না করে খাওয়ার চল রয়েছে নানা জায়গায়।এ সবজিতে ভিটামিন-এ, বি-কমপ্লেক্স, সি, ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফ্লেভনয়েড পলি-ফেনলিক উপাদান সমূহ ছাড়াও দেহের নানারকমের পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে।
প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে
খাদ্যশক্তি- ৪১ কিলোক্যালরি
আমিষ- ১.৪ গ্রাম
শর্করা- ৪.৫ গ্রাম
চর্বি- ০.৫ গ্রাম
খনিজ লবণ- ০.৭ গ্রাম
ভিটামিন বি- ০.৭ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি- ২৬ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম- ৪৮ মিলিগ্রাম
কোলেস্টেরল- .০৬ মিলিগ্রাম
লৌহ- ০.৭ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন- ৭২০০ মাইক্রোগ্রাম
জেনে নিন কুমড়োর অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে
-
এক
মিষ্টি কুমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ উপাদান থাকে যা চোখের কর্নিয়াকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান হাতিয়ার কিন্তু ভিটামিন এ।
-
দুই
মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে জিংক, যা হাড়ের অস্টিওপোরোসিস রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ঠিক রাখে এবং শরীরে বয়সের ছাপ সহজে পড়তে দেয় না। এছাড়া চুলপড়া কমাতে ও চর্মরোগ প্রতিরোধে মিষ্টি কুমড়া সহায়তা করে। জিংক পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।
-
তিন
কুমড়ার ক্যারটিনয়েড এর জন্য রঙ উজ্জ্বল কমলা হয়ে থাকে এবং এটি দেহের জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এই সবজির বিটা-ক্যারোটিন উপাদান মানবদেহের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। আলফা-ক্যারোটিন উপাদান দেহে টিউমার হওয়া থেকে রক্ষা করে। কুমড়ার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন-ই মানবদেহকে ক্যান্সার রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
-
চার
কুমড়ার আসল উপাদান ভিটামিন-এ ও বিটা ক্যারোটিন ত্বক খুব ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-এ ত্বককে সুরক্ষা করে ও বিটা-ক্যারোটিন, সূর্যের তাপে ত্বকের যে সমস্যা হয়ে থাকে তা রোধ করে। ভিটামিন-বি ও সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও স্বাস্থ্যবান চামড়া তৈরিতে সহায়তা করে। ভিটামিন বি-৫ ত্বকের যেকোনো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
-
পাঁচ
গর্ভাবস্থায় মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত। কারণ এটি দেহে অনেক বেশি শক্তি যোগায় ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য কুমড়া অনেক উপকারী খাদ্য। এটি পাশাপাশি হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কুমড়ার আয়রন বাচ্চাকে অক্সিজেন দিতে সাহায্য করে ও মায়ের রক্তশূন্যতা রোধ করে।
-
ছয়
কুমড়াতে পটাশিয়াম উপাদান আছে, যা মানবশরীরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন-সি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে থাকে। কুমড়োর ফাইবার দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রেখে দেহকে স্ট্রোক করার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।
-
সাত
মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে এল ট্রিপটোফ্যান নামের এক ধরনের বিশেষ উপাদান যা বিষণ্নতা প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। আপনার যদি প্রায়ই মন খারাপ থাকে অথবা বিষণ্নতায় ভোগেন, তাহলে খাদ্যতালিকায় রাখুন মিষ্টি কুমড়া।
-
আট
ফাইবারে ভরপুর কুমড়া খেলে দেহের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। কুমড়া দেহের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ডায়রিয়া সমস্যায় দূর করতে সাহায্য করে এবং কাঁচা কুমড়োর রস মানবদেহের অ্যাসিডিটি সমস্যা রোধ করে।
আর মিষ্টিকুমড়ার বিচি? সেতো আরেক মহাঔষধ। সেটা নিয়ে না হয় আরেকদিন আলোচনা করবো।
পুষ্টিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন
চেম্বারঃ
সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, ইউনিট-২, কাতালগঞ্জ, চট্টগ্রাম। প্রতি শুক্রবার থেকে বুধবার, সন্ধ্যা ৭ঃ০০ টা থেকে রাত ১০ঃ০০ টা পর্যন্ত।
সিরিয়ালের জন্যঃ ০১৭৬৪-৭৮৬৭৫৩
অনলাইন সেবা পাওয়ার জন্য
হোয়াটস এ্যাপ নম্বর-01533843123
![]() |
Nutritionist Iqbal Hossain |
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ |
খাদ্য ও পুষ্টি |
- royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট |
এক থালা বাঙালিয়ানা। আহা অমৃত |